পুরীর জগন্নাথ মন্দির - Jagannath-Mondir - কৃষ্ণ কথা - Krishnokotha.com

পুরীর জগন্নাথ মন্দির - Jagannath-Mondir - কৃষ্ণ কথা - Krishnokotha.com

পুরীর জগন্নাথ মন্দির - Jagannath-Mondir - কৃষ্ণ কথা - Krishnokotha.com

কথায় আছে বিশ্বাসে মেলায় বস্তু তর্কে বহুদূর। প্রাচীন ভারতের ঐতিহাসিক স্থান গুলির মধ্যে অধিকাংশই এখনও পর্যন্ত নানা রহস্য বহন করে চলেছে। যার রহস্যের নেই কোন কিনারা। এর মধ্যে বেশির ভাগই হি্ন্দু মন্দির বা ধর্মীয় স্থান। রাজা ইন্দ্রদ্যুন্ম নির্মিত ওড়িশার পুরীতে অবস্থিত জগন্নাথ মন্দিরকে হিন্দুদের চার ধামের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাম বলা হয়। কয়েক হাজার বছরের পুরনো এই মন্দিরে লক্ষ ভক্তের সমাগম লেগেই থাকে সারা বছর।

১১৭৪ সালে মন্দির সংস্কার করে বর্তমান রূপ দেওয়া হয় মন্দিরকে। আপাত দৃষ্টি সাধারণ মনে হলেও এই মন্দিরে এমন কিছু রহস্য আছে যা আজও উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। এইসব ঘটনার নেই কোন বৈজ্ঞানিক তাৎপর্য আর কিভাবেই বা এই ঘটনা ঘটছে কেনো ঘটছে তার সদুত্তর দিতে পারেননি মন্দিরের নিত্য পুজারী বা সেবায়েতরা। কি সেই রহস্য, পুরীর মন্দির ঘুরে এসেছেন তবু অনেকেই অজানা,

মন্দিরের চূড়ায় লাগানো পতাকাটি ওড়ে হাওয়ার গতিবেগের বিপরীতে। সন্ধ্যার পর যখন সমুদ্রের দিক থেকে হওয়া বয়, পতাকা দিক পরিবর্তন করে উড়তে শুরু করে। কিভাবে এই ঘটনা ঘটনা ঘটে আজও তার কোনো উত্তর দিতে পারেনি বিজ্ঞান।
এরপর আপনাকে অবাক করে দেবে মন্দিরের চূড়ায় বসানো সুদর্শন চক্র। মন্দিরের যে প্রান্ত থেকেই চূড়ার দিকে তাকাবেন সুদর্শন চক্র সর্বদা আপনার দিকেই থাকবে।

এখানে হাওয়ার গতিপথও প্রাকৃতিক নিয়মের বিরুদ্ধে চলে। সাধারণত দিনের বেলায় হাওয়া সমুদ্রের দিক থেকে তটের দিকে আসে। আর সন্ধ্যের সময় তটের দিক থেকে সমুদ্রের দিকে।কিন্তু পুরীর মন্দিরের ক্ষেত্রে তা ঠিক উল্টো। সকালে তটের দিক থেকে সমুদ্রের দিকে হাওয়া চলে, এবং সন্ধ্যায় সমুদ্রের দিক থেকে তটের দিকে হাওয়া বয়।

ভারতের অন্যান্য মন্দিরের মতোই এই মন্দির যথেষ্ট উচ্চতা সম্পন্ন। তবে এই মন্দিরের উঁচু চূড়ার উপর বসে না কোন পাখি, বাসাও বাঁধে না এমনকি উড়েও যায় না। কোন উড়োজাহাজের গতিপথ এই মন্দিরের চূড়ার উপর দিয়ে করা হয়নি। এভাবেই চলে আসছে যুগ যুগ ধরে।

বিশাল মন্দিরের ছায়া দিনের কোন সময়ই ভূমিকে স্পর্শ করে না। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কেউ কখনো দেখতে পায়নি পুরির মন্দিরের ছায়া।


পুরীর জগন্নাথ মন্দির - Jagannath-Mondir - কৃষ্ণ কথা - Krishnokotha.com


জগন্নাথ মন্দির অবস্থিত সমুদ্রের একদম পাশেই। বহু সামুদ্রিক ঝড় এসেছে এই মন্দিরের উপর। কোন বড় ক্ষতিই করতে পারেনি। এমনকি সুনামির সময় বিশাল জলচ্ছাসের সময়ও ক্ষতি হয়নি এই মন্দিরের।

প্রতিদিন মোট ৩৬ রকমের ভোগের দেওয়া হয় জগন্নাথ দেবকে। সাতটি বিশাল মাপের হাঁড়ি পর পর বসানো হয় আগুনের উপর। আর তাজ্জব ভাবে সবচেয়ে উপরের হাড়িতে খাবার আগে হয়। কোন দিন এই ভোগ এক বিন্দু পুড়ে যায়না। যতই ভক্ত সমাগম হোক কখনো মন্দিরে অভাব পরে না ভোগের। বহুদিন ধরে রেখে দিলেও নষ্ট হয়না ভোগের প্রসাদ।

ভোগ রান্নার সমস্ত আনাজ আসে মন্দিরের নিজস্ব জমিতে চাষ করা ফসলের থেকে। এই জমি জগন্নাথ দেবের নামেই। এবং আজ পর্যন্ত এই জমিতে কখনো ফসলের ক্ষতি হয়নি।

মন্দিরের সিঁড়িতে সন্ধ্যের সময় পা দিলে দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখলে সমুদ্রের শব্দ ঢুকবে না কানে। আবার তৃতীয় সিঁড়িতে পা রাখলে শোনা যাবে সমুদ্রের শব্দ।

সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় জগন্নাথ দেবের নব কলেবরের ঘটনা। সাধারণত কোনও মন্দিরে মূর্তি নয় পাথর নয় ধাতু দিয়ে তৈরি করা হয়। কিন্তু পুরীর মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা তিনজনের মূর্তিই কাঠের তৈরি। প্রত্যেক ১২ বছর পর একটি গোপন রীতি মেনে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে নতুন শরীর বা কলেবর প্রদান করা হয়।

অর্থাত্‍ নতুন রূপে তৈরি করা হয় যাকে বলা হয় পুনর্জন্ম বা নবকলেবর। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মন্দিরের মুখ্য পুরোহিত সপ্নাদেশ পান যে গাছের কাঠ দিয়ে নবকলেবর হবে তা কোথায় পাওয়া যাবে। সেই গাছের কিছু বিশেষত্ব থাকতে হবে। গাছটি নিমগাছ হতে হবে কিন্তু তাতে চন্দনের গন্ধ থাকবে, গাছে শঙ্খ, চক্র, গদা,পদ্মর চিহ্ন থাকবে। সেই গাছে যেন কোনও দিনেও কোনও পাখি না বসে, পশু না চড়ে। আর গাছটি সাপেরা ঘিরে রাখবে।




পুরীর জগন্নাথ মন্দির - Jagannath-Mondir - কৃষ্ণ কথা - Krishnokotha.com

জয় প্রাণের জগন্নাথের জয়
Krishnopkotha.com
সনার্তন ধর্মীয় ওয়েবসাইট
ভুল ত্রুটি ক্ষমা ‍সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
শ্লোক ও শ্লোকার্থমন্ত্র - Krishno-Kothaমূর্তিপূজা সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তরভগবান শ্রী কৃষ্ণের অমৃত লীলা কথা৩০টি প্রনাম মন্ত্রের তালিকাযে সকল মানুষ গীতার জ্ঞান বুঝে নাহিন্দু ধর্মীয় বিষয়ক ১০০টি প্রশ্ন ও উত্তরশ্রীমদ্ভগবদগীতার-অর্জুন বিষাদ-যোগশ্রীমদ্ভগবদ্গীতার মাহাত্ম্য পড়ুনমঙ্গলাচরণ ( Moggolacoron )গীতায় যে ৫টি জিনিস সর্ম্পকে জানা পারিপ্রশ্ন ও উত্তর - Krishno Kothaশ্রী শ্রী দেবী সরস্বতী - Krishno Kothaসরস্বতী পুজোর আগে কুল (বরই) খাইনা কেন?মানুষের অবাধ মিলনের বিরাট বাধা স্বরূপে সাম্প্রদায়িকতাসর্বজীবের ভগবান শ্রীকৃষ্ণতুলসী তত্ত্বভগবান শ্রীকৃষ্ণের জীবনীনীতিশিক্ষামূলক গল্প২৮ টি নরকের মধ্যে অন্যতম "অসিপত্রবন"গুরু কে? যারা জানতে আগ্রহীপ্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপূজা করবেন কিভাবে?হিন্দু ধর্মের লোকেরা হাতে লাল সুতো বাঁধে কেন?শ্রী রামচন্দ্রের কিছু অমৃত বাণীপবিত্র_বেদ এর কিছু চমৎকার অমৃত বাণীরাধা কৃষ্ণের দিব্য সম্পর্কসিঁন্দুর সম্পর্কে তথ্যকলিযুগে ধর্ম নিয়ে এত রেষারেষির কারণসনাতন শাস্ত্র মতে মায়ের স্থান কোথায় সে সম্পর্কেনবধারা ভক্তি সম্পর্কেমৃত্যু রহস্য সম্পর্কেসনাতন শাস্ত্রে বর্ণিত একাদশী তত্ত্ব সম্পর্কেশ্রী কৃষ্ণের ভক্ত শুদ্ধ ভক্ত সর্বদা আমার হৃদয়ে থাকেনভগবান শ্রী কৃষ্ণের অষ্টশত নামগীতাপাঠ প্রসঙ্গ - Krishno Kothaগীতায় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী